প্রেম-ভালবাসার মূল্য কতক্ষণ থাকে?

লিখেছেন লিখেছেন ইসহাক মাসুদ ২১ আগস্ট, ২০১৩, ১১:৪১:২০ রাত

মানুষ নিত্য জিনিষের কদর ও মূল্যায়ন করে না অথচ সেটি ছাড়া তার চলেও না । তাকে স্বাভাবিক বলে মেনে নেয়। যেমন স্বাদ করে বিয়ে করে বউকে অবহেলা করা। বউ স্বামী সাথে নিত্য থাকে তাই বউ যদি ভাল চিত্তাকর্ষক কোন পোষাক পরে অথবা বিবসনা হয়ে স্বামীর সামনে আসে তার প্রতি পতিদেব ভাল ভাবে তাকাবেও না, স্বাদের বৌকে কিছুক্ষণ দেখে প্রাণও জুড়াবে না। কারণ বউ নিত্য তার মূল্য নাই অথচ বৌ ছাড়া একদিনও স্বামীর চলবে না। ঘরে প্রতিটি মূহুর্তে স্বামীর বউয়ের প্রয়োজন। কর্মস্থল থেকে আসার পর দরজাটা খুলে দিতে, খাবার রান্নায়, পরিবেশনে, হাতের খুঁটিনাটি বস্তু এনে দিতে,গোসলের সাবান, তোয়ালেটা হাতে উঠিয়ে দিতে এবং বিশেষ প্রয়োজনে অর্থাৎ সর্বক্ষণ স্ত্রী ছাড়া একজন পুরুষের সময় চলবে না। স্ত্রীর কোন আচরন স্বামী মনপুত না হলে বেচারিকে ধমকের উপর ধমক সহ্য করতে হয়। তার মূল্য নাই, সে নিত্য। বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, ঘরে বিবসনা সুন্দরী স্ত্রীর দিকে তাকায় না কিন্তু রাস্তায় কালো মেয়ের দিকে অপলক তাকিয়ে থাকে। অন্তরে আল্লামা শফির বর্নিত তেঁতুল ক্ষরণ হয়। যত সব অসম্ভব আকাশ কুসুম ভাবে। একটু সুন্দরী দেখলেতো সারছে, তখনি স্বপ্ন দেখা শুরু করে। যদিও তা অবাস্তব। কারন বাহিরের মেয়ে অনিত্য। স্ত্রীর অভাব কিছুটা অনুভব করে যখন স্ত্রী বাপের বাড়ীতে যায়। সে অভাবটি ভালবাসায় নয়, তার প্রয়োজন গুলো সারছে না তাই। উপরোক্ত বিষয়টি সবার জীবনে স্বাভাবিক, প্রকৃতিক। আমি বলছি এই কারণে, ইদানিং কিছু ছেলে মেয়ে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যা করছে দেখে। যৌনতা ও প্রেম জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ, কিন্তু সেটি একটি জীবনের অংশ মাত্র, পুরা জীবন না। লাইফের অনেক অংশ আছে। আমার ফেসবুক ফ্রেন্ড লিষ্টে আমার এক ছোট ভাই ছিল। পড়া লেখার পাশাপাশি ব্যবসাও করতো। দেখতে যেমন সুন্দর আচার আচরণও ছিল তেমন মার্জিত ভদ্র। আমাকে বড় ভাই হিসাবে সম্মান করতো। তার বাড়ীর পাশাপাশি বাড়ীর কলেজ পড়ুয়া এক মেয়ের সাথে গভীব ভাব ছিল। মেয়েটিও তাকে গভীব ভাবে ভালবাসতো । উভয় পরিবারের লোকজন বিষয়টি জানতো। এ নিয়ে কয়েক বার উভয় পরিবারের মাঝে বাকবিতন্ডাও হয়েছে। মেয়ের বাবা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি এ সম্পর্ক মানেন না এবং কখনো তা মেনে নিবেন না। মেয়েটি তার বাবার মনোভাব বুঝে ছেলে বাসায় কয়েকবার চলে আসে এবং ছেলে অভিভাবককে জোর দেয় তাদের যেন বিয়ে পড়িয়ে দেয়া হয়। ছেলে বাবা মেয়েটিকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে তার বাড়িতে পৌঁছিয়ে দেয়। এ নিয়ে যখন উভয় পরিবারের মাঝে গরম হওয়া চলছে তখন ছেলে আত্মহত্যা করে বসে। এরকম একজন ভদ্র ছেলে চলে যাওয়াতে এলাকার আবাল বৃদ্ধ বনিতা সকলেই আপসোস করেছিল। মজার ব্যাপার হল মেয়েটি যে ছেলেকে পাওয়ার জন্য তার বাসায় কয়েক বার বেগে চলে আসে এবং যে মেয়ের জন্য একটি তরতাজা প্রাণ অকালে ঝরে পড়লো, সেই মেয়েটি মাত্র দু'মাসে মাথায় একই কলেজের অন্য ছাত্রকে ভালবেসে বসে এবং সরাসরি পরিবারকে তার ভালবাসার কথা জানিয়ে দেয়। পরিবারের লোকজন আগের ঘটনা থেকে সবক নিয়ে কলেজ ছাত্রের সাথে বিয়ে দেয়। কলেজ ছাত্রের বাড়ীর মেয়ের বাড়ী থেকে অন্তত পাঁচ শত মাইল দুরে। কলেজ ছাত্র দেখতে শুনতে আগের ছেলে চেয়ে শতগুন মসকরা, টিংটিংয়ে, কালো এবং অনেকটা বেটে। সর্বপোরি অপ্রতিষ্ঠিত কলেজ ছাত্র। আর মেয়েটি দিব্যি কলেজ ছাত্রের সাথে সংসার করছে। ছেলে পুলে হইছে কিনা জানি না।

আমার বলার বিষয় হল, প্রেম প্রীতি বিয়ের পর অতীব স্বাভাবিক হয়ে যায় এবং নিত্য হয়ে যায়। তাই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত না করে জীবনটাকে শুধু মাত্র প্রেম ভালবাসার পিছনে ব্যয় না করাটা উত্তম।

বিষয়: বিবিধ

১৬৮৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File